বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ইতিহাসে সর্বোচ্চ
ইনভেস্টিগেশন ডেস্ক : বিশ্ববাজারে যেকোনও সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হওয়ার রেকর্ড গড়েছে স্বর্ণ। সোমবার (২৭ জুলাই) প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৯৪৪ দশমিক ৭৩ ডলারে। এর আগে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই ধাতুটি রেকর্ড মূল্য গড়ে। ওই সময় এর দাম ছিল প্রতি আউন্স এক হাজার ৯২১ ডলার। বিশ্লেষকদের দাবি, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে অন্য কিছুর ওপর আস্থা রাখতে না পেরে বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণ কিনতে থাকায় এর দাম রেকর্ড ছুঁয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
করোনাভাইরাসের মহামারিতে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ৬০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এই আতঙ্কের মধ্যে ক্রমেই বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার রাজনৈতিক উত্তেজনা। এসব অস্থিরতায় বর্তমানে সুদের হার প্রায় শুন্যের কাছাকাছি নেমেছে আবার বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারে লভ্যাংশ নিয়ে অনিশ্চয়তাও সর্বোচ্চ পর্যায়ে। ফলে অনেক বিনিয়োগকারী স্বর্ণ কেনাকে মনে করছেন নিরাপদ বিনিয়োগ। যদিও এতে লভ্যাংশ কিংবা সুদের হার পাওয়া যায় না কিন্তু সংকটকালে এর দাম বেড়ে যায়। এ বছর এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বেড়েছে ২৮ শতাংশ।
তবে স্বর্ণে বিনিয়োগের কিছু সমস্যাও আছে। লভ্যাংশ কিংবা সুদের হার না পাওয়ার পাশাপাশি স্বর্ণে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাড়তি খরচ আছে। যুক্তরাজ্যের মূল্যবান ধাতু ব্যবসায়ী বুলিয়নভল্টের গবেষণা পরিচালক আদ্রিয়ান অ্যাশ বলেন, স্বর্ণ মজুদের ক্ষেত্রে (ইন্সুরেন্সসহ) প্রতিবছর বিনিয়োগাকারীর মজুদের দশমিক ১২ শতাংশ পর্যন্ত খরচ হয়। এই হিসেবে প্রতিটি সাড়ে বারো কেজি স্বর্ণের বারের বর্তমান মূল্য প্রায় ছয় লাখ পাউন্ড। এতে প্রতিমাসে এক বিনিয়োগকারীর খরচ প্রতি মাসে প্রায় ৬০ পাউন্ড। তারপরও স্বর্ণ কেনার দিকে ঝুঁকছে বিনিয়োগকারীরা।
স্বর্ণ কেনার দিকে বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকে পড়ার আরেকটি কারণ হতে পারে মার্কিন ডলারের মূল্য কমে যাওয়া। ডলারের মূল্য কমে যাওয়ায় অন্য মুদ্রা ব্যবহারকারীরা স্বর্ণ কিনলে একই পরিমাণ স্বর্ণ দিয়ে বেশি পরিমাণ ডলার কিনতে পারছেন। ফলে তারা স্বর্ণে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র-চীন রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির জেরে দেশ দুটি পাল্টাপাল্টি কনস্যুলেট বন্ধ করার পর পড়ে গেছে মার্কিন ডলারের দর। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের পর ডলারের সূচক সবচেয়ে নিচে নেমে গেছে। মুদ্রা নীতি নিয়ে আলোচনা করতে এ সপ্তাহে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে রুপার দামও। প্রায় ৬ শতাংশ বেড়ে এই ধাতুটির প্রতি আউন্স বিক্রি হচ্ছে ২৪ দশমিক ৩৬ মার্কিন ডলারে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এই ধাতুটির দাম সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে রুপার দামে রেকর্ড তৈরি হয়।
পিএনএস/এএ